বৃহস্পতিবার , ৯ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল

কুষ্টিয়া কবরবাড়িয়া গ্রামের জুয়েলকে হত্যা করা হয়েছে – পরিবার।সন্দেহের তীর ৩ বন্ধু ও প্রেমিকার পরিবারের দিকে

প্রকাশিত হয়েছে -

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কবরবাড়িয়া গ্রামের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আর এই হত্যাকান্ডের ঘটনার সন্দেহের তীর জুয়েলের ৩ বন্ধু ও প্রেমিকার পরিবারের দিকে। জুয়েলের পরিবার জানায়, প্রতিদিনের মতো সেদিনও বাবার সাথে বাড়ির কাজ করছিলেন কবরবাড়িয়া গ্রামের ছের আলীর ছোট ছেলে জুয়েল। বিকেলের দিকে হঠাৎ করে জুয়েলের ৩ বন্ধু কবরবাড়িয়া গ্রামের মাছুম বিশ^াসের ছেলে রাতুল, একই এলাকার জয়নালের ছেলে জিসান ও মাহাবের ছেলে আলামিন এসে জুয়েলকে ডাক দিলে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। সারা রাত অতিবাহিত হলেও সেদিন বাসায় ফেরেনি জুয়েল। পরদিন ৪ জুন সকালে কবরবাড়িয়া গ্রামের বাইপাস সংলগ্ন ধানক্ষেতের মাঠের মধ্যে পাওয়া যায় জুয়েলের মরদেহ। নিহত জুয়েলের পিতা ছের আলী বলেন, লাশ হাসপাতালে নেওয়ার আগেই বারুইপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর আবদারসহ কয়েকজন সমাজপতিরা তাকে মিরপুর থানায় নিয়ে যায় এবং তাকে দিয়ে দামী মোবাইল কিনে না দেওয়ায় জুয়েল বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করে এমন অভিযোগ করানো হয়। তিনি আরও বলেন, কবরবাড়িয়া এলাকার সাদেক বিশ্বাসের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো জুয়েলের। এব্যাপারে জানাজানি হলে মেয়ের চাচা লতিফ ও ভাই রানা বাড়িতে এসে ও রাস্তায় হুমকী-ধামকী দেই তাকে এবং তার পরিবারকে। জানা যায়, ঐ মেয়ের চাচা লতিফ ঐ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারের সম্পর্কে বিয়াই হন। পরিবারের দাবী এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করেই প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের সন্তান জুয়েলকে। তারা বলেন, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় পরিকল্পনা করে জুয়েলকে হত্যা করে গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে অপমৃত্যুর নাকট সাজিয়েছে। এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত এবং সুষ্ঠ বিচার চাই নিহত জুয়েলের পরিবার। নিহত জুয়েলের বড় ভাই সোহেল বলেন, নিহতের পিঠে কাটা-কাটা দাগ রয়েছে, ঝড়ছিলো রক্ত, মাথায় রয়েছে ক্ষত । জুয়েল গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে মারা যাওয়ার কোন আলামত খুজে পাননি তিনি। তার ছোট ভাই জুয়েলকে বন্ধুদের দিয়ে ডেকে নিয়ে এসে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবী তার। জুয়েলের মা রেবেকা খাতুন বলেন, গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে মারা যাননি জুয়েল তার সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে। আর এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় সঠিক তদন্ত এবং সুষ্ঠ বিচার চান তিনি। ঘটনাস্থলে মরদেহটি দেখার পরে এলাকাবাসীরা বলছেন, এটি অপমৃত্যু বা আত্মহত্যা নয়, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আর এই হত্যাকান্ডের ঘটনা সঠিক ভাবে তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবী এলাকাবাসির। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার রুমন রহমান জানান, তাৎক্ষনিকভাবে মৃত্যুর কারন জানা যায়নি। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে জানাযাবে সঠিক মৃত্যুর কারন। এবিষয়ে কথা বলতে রাজি নয় অভিযুক্ত পরিবার। তাদের দাবী এরকম কোন ঘটনা জানেননা তারা। মিরপুর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে মিরপুর থানায়, মামলা নং-২১ । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসেনি এখনো। রিপোর্টে হত্যাকান্ডের আলামত থাকলে অপমৃত্যু মামলাটি পুলিশ বাদি হয়ে হত্যা মামলা করা হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা। দ্রুত সময়ের মধ্যে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং যথাযত তদন্তের মাধ্যমে জুয়েলের হত্যাকারিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন জুয়েলের পরিবার ও এলাকাবাসী।