সমাচার ডেস্ক অনলাইনঃ
পূর্ব শত্রুতার জেরে কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলায় আপন দুই ভাই মনিরুল (২৪) ও মাসুমকে (২০) অপহরণের পর গুলি করে হত্যার দায়ে ৫ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকালের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি গ্রামের গাজীর পাড়া এলাকার মৃত লোকমান হোসেনের ছেলে আসাদুল, একই গ্রামের বাজার পাড়ার পাইলটের ছেলে সুমন, একই গ্রামের হাতির পাড়ার বাসিন্দা ছাবের ও দর্গা পাড়ার বাসিন্দা জামিল এবং মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের হান্নান মন্ডলের ছেলে মিনাল।
এ মামলার আসামি টোকন, জাহাঙ্গীর ও ইয়ারুল ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ায় হত্যার দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় আসাদুল ও মিনাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পরই তাদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামিল, সুমন ও ছাবের পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি গ্রাম থেকে ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি বিকাল ৫টার দিকে মনিরুল ও তার ছোট ভাই মাসুমকে পূর্ব শত্রুতার জেরে অপহরণ করেন আসামিরা। ওই দিন রাতে মাথায় গুলি করে মনিরুল ও মাসুমকে গুলি করে হত্যা করে আসামিরা। পরের দিন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার কোদালকাটি মাঠের একটি হলুদ ক্ষেত থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতদের মা ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতী এলাকার মৃত মনছুর আলীর স্ত্রী মরিয়ম বেগম আসামিদের নামে দৌলতপুর থানার হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ১৪ মে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত ধার্য তারিখে আদালতের বিচারক মামলার আসামিদের শাস্তির আদেশ দেন। আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন দুই ভাইকে গুলি করে হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ৫ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা পলাতক।