শুক্রবার , ১০ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল

শীতের আগমনে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত মহেশপুরের গাছিরা

প্রকাশিত হয়েছে -



সেলিম রেজা,মহেশপুর(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধিঃ




আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে পুরোদমে শীত শুরু হবে। এরই মধ্যে ভোরে লতা-পাতা আর ঘাসের উপর ঝরে পড়ছে শিশির বিন্দু। শিশির ভেঙে গ্রামের চাষিরা ছুটে যাচ্ছে সবুজ ধানের ক্ষেতে। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে গ্রামের গাছিরা।

এবার একটু আগেই শীতের দেখা মিলছে ঝিনাইদহের সীমান্তবর্তী মহেশপুর উপজেলায়। দিনে সূর্যের খরতাপ আর রাতে কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। ভোর থেকেই ব্যস্ত গাছিরা দা দিয়ে খেজুর গাছ পরিচর্যায়। ক’দিন পরেই গাছ থেকে গাছিদের প্রক্রিয়াজাত করা খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা হবে চিড়ার মোয়া,গুড় ও পাটালি। শীতের সকালে গ্রামের গৃহস্থ বাড়িতে খেজুরের রস দিয়ে বানানো হবে মুখরোচক পিঠা, পায়েস, ক্ষীর।

সরেজমিনে দেখা গেছে,উপজেলার শংকরহুদা বাথানগাছীসহ আশপাশের গ্রামের মেঠো রাস্তার পাশে সারি সারি লাগানো খেজুর গাছ কাটতে ব্যস্ত গাছিরা। আঞ্চলিক ভাষায় এটাকে গাছ তোলা বলা হয়ে থাকে। এ সময় গাছিরা বিশেষ কায়দায় কোমরে রশি বেঁধে খেজুর গাছের উপরে উঠে। তোলা গাছে এক সপ্তাহ পরেই আবার হালকা কেটে তাতে নল লাগানো হয়। পরে সেখান থেকে রস সংগ্রহ করা হয়।

গ্রামের খেজুর রস সংগ্রহকারী গাছি আবুল হাশেম জানান, খেজুরের রস দিয়ে আগাম গুড় ও পাটালি বানাতে পারলে লাভ বেশি হয়। সেই আশাতেই চলতি বছরেও গুড় তৈরির দিকে ঝুঁকছে গাছিরা।

তিনি জানান, অনেক বছর থেকেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন। এ রস থেকে তিনি গুড় ও পাটালি তৈরি করে উপজেলার বিভিন্ন শহর, হাট-বাজারে বিক্রি করেন।

একই গ্রামের গাছি আফাজউদ্দীন জানান, ভোরে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করা হয়। ৫০টি গাছ কাটতে একজন শ্রমিককে ৪’শ টাকা দিতে হয়। এসব গাছ থেকে ৩০ ভাঁড় রস হয়। এক ভাঁড় গুড়ের ওজন হয় ১০-১২ কেজি। বাজার ভালো থাকলে এক হাঁড়ি গুড় বিক্রি হয় ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত।

মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান,খেজুর গাছ কাটার জন্য গাছি কমে যাওয়ার কারণে খেজুর গাছ লাগানো আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে খির খেজুর গাছ লাগানোর জন্য চাষীদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।