সমাচার ডেস্ক অনলাইন :
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে আজ বুধবার (৮ মে) কুষ্টিয়া সদর ও খোকসা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে নির্বাচনের সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করা হয়েছে। ৭ মে, মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন থেকে সদর উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ১৪৫টি কেন্দ্রে ও খোকসা উপজেলা পরিষদ থেকে খোকসা উপজেলার ৫০টি কেন্দ্রে নির্বাচনি সরঞ্জাম স্ব স্ব প্রিসাইডিং অফিসারদের মাধ্যমে পৌঁছে গেছে। তবে কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে ভোটের দিন অর্থাৎ বুধবার সকাল ৭টার মধ্যে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সহিদুর রহমান জানান, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ করতে বিজিবি মোতায়েনসহ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এবারের নির্বাচনে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দুজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দুজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং খোকসা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোট গ্রহণ আজ বুধবার (৮এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এই ধাপে ১৩৯ উপজেলার মধ্যে ২২টিতে ইভিএম এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট হবে। এই ধাপে মোট ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ করে অর্থাৎ মোট ২৮জন প্রার্থী ইতিমধ্যে বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী হয়েছেন। হাতিয়া, মুন্সিগঞ্জসদর, বাগেরহাট সদর, পরশুরাম ও শিবচর এই পাঁচটি উপজেলার সব পদের প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী হয়েছেন। অর্থাৎ এই পাঁচ উপজেলায় কোনো পদেই ভোটের প্রয়োজন পড়ছে না। এ ছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তিনটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি। ভোটের পরিবেশ শান্ত রাখতে স্বাভাবিক এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৭জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ বা ১৯ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া বিশেষ এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ বা ২১ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। উপজেলার আয়তন, ভোটার সংখ্যা ও ভোটকেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতি উপজেলায় ২ থেকে ৪ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবেন। উপকূলীয় এলাকার দ্বীপাঞ্চলে কোস্টগার্ড, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ভোট কেন্দ্রে আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোট গ্রহণের আগের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন ও ভোট গ্রহণের পরের দুইদিন মোট পাঁচ দিন নিয়োজিত থাকবেন।
মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে আজ বুধবার অর্থাৎ ভোট গ্রহণের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিন চালিত বোটসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে মোটর সাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
ভোট গ্রহণের সাত দিন আগে ও ভোট গ্রহণের পরবর্তী সাত দিন পর্যন্ত লাইসেন্সধারীদের অস্ত্রসহ চলাচল না করতে কিংবা বহন ও প্রদর্শন না করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে নির্দেশনা জারি করেছে।
তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোট গ্রহণের তিন দিন পূর্ব পর্যন্ত আচরণ বিধি প্রতিপালন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও প্রতিরোধে প্রতি উপজেলায় একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং ভোট গ্রহণের তিনদিন পূর্ব থেকে ভোট গ্রহণের পরের দিন পর্যন্ত প্রতি তিন ইউনিয়নের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া ভোট গ্রহণের দুইদিন পূর্ব থেকে ভোট গ্রহণের দুইদিন পর পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।
প্রথম ধাপে ১১ হাজার ৫৫৬ কেন্দ্রের ৮১ হাজার ৮০৪ ভোট কক্ষে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১০২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ১ কোটি ৬০ লাখ ২ হাজার ২২৪, নারী ১ কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯০ এবং ১৮৮ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।