নিজস্ব প্রতিবেদক :
কুষ্টিয়া জেলা যুবদলের সমন্বয়ক আব্দুল মাজেদ দাবী করেছেন, কুষ্টিয়া থানা আমি মাজেদ নেতৃত্ব দিয়ে ভেঙেছি- কথাটি ভুলবশত বলে ফেলেছিলাম।তার নেতৃত্বে কুষ্টিয়া মডেল থানা ভাঙচুর করার যে ক্তব্য তিনি দিয়েছেন তা ভুলবশত বলে ফেলেছেন।এটা সঠিক নয়।
এতে তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে সদর উপজেলার কবুরহাটের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
গত রোববার যুবদল নেতা আব্দুল মাজেদের একটি ভিডিও বক্তব্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে মাজেদকে বলতে শোনা যায়, ‘শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে শেখ হাসিনার সরকার পালাতে বাধ্য হয়েছে। কুষ্টিয়ায় শেষের দিন যেদিন ক্ষমতা হস্তান্তর হয়, এখানে আন্দোলনকারীরা আছে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, কুষ্টিয়া থানা আমি মাজেদ নেতৃত্ব দিয়ে ভেঙেছি।’
মাজেদ আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের বলব আপনারা এমন কিছু করবেন না, যাতে কুষ্টিয়ায় আমাদের দম বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষমতা চিরস্থায়ী না। জনগণ ভোট না দিলে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারবে না। কিন্তু আমাদের দম যেন বন্ধ না হয়। হানিফ, আতা ও খুনি হাসিনার মতো যেন পালাতে না হয়।’
গত ৭ আগস্ট বিকেলে সদর উপজেলার খাজানগর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে চাঁদাবাজি রোধে চালকল মালিক ও স্থানীয়দের নিয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে সমালোচনার মুখে পড়েন এই যুবদল নেতা। মাজেদ কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের প্রধান সমন্বয়ক।
সংবাদ সম্মেলনে যুবদল নেতা আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘খাজানগর দেশের বৃহৎ চালের মোকাম। খাজানগরসহ আশপাশের এলাকায় প্রায় পাঁচ শতাধিক চালকল রয়েছে। এসব চালকল মালিকদের হুমকি–ধমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করার চেষ্টা চলছে, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে চালকল মালিক ও এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে সচেতনতার জন্য ওই দিন সমাবেশের আয়োজন করেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘সমাবেশে অনেক বিষয় তুলে ধরে ১০ থেকে ১১ মিনিটের বক্তব্য দিয়েছি। ওই বক্তৃতায় ভুলবশত থানা ভাঙার বিষয়ে যা বলেছি, তা সঠিক নয়। থানা ভাঙার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। বরং বক্তৃতার পুরো অংশটি প্রচার না করে খণ্ডিত বক্তব্য দিয়ে আমাকে হেয় করা হচ্ছে। থানায় হামলার দিনের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করলে প্রকৃত সত্য বের হয়ে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
যুবদল নেতা মাজেদ আরও বলেন, ‘১৪ বছর পর আমার এলাকায় আয়োজিত একটি সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে অসাবধানতা বশত মুখ দিয়ে এই কথাটি বেরিয়ে গেছে। এর জন্য আমি দুঃখিত।’
এদিকে গত রবিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে যুবদল নেতা আব্দুল মাজেদের বক্তব্যের দায়ভার সংগঠন বহন করবে না বলে জানান জেলা যুবদলের সভাপতি আল আমিন কানাই ও সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন।
জেলা যুবদলের সভাপতি আল আমিন কানাই বলেন, ‘তিনি যুবদলের সমন্বয়ক টিমের প্রধান। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন তার এই বক্তব্যের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা কী। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, তার বক্তব্যের সঙ্গে জেলা যুবদলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সেটা তার একান্তই ব্যক্তিগত মতামত। এর দায়ভার নিজেকে বহন করতে হবে। কারও ব্যক্তিগত দায়ভার সংগঠন বহন করবে না।’
যুবদলের এই নেতা আরও বলেন, ‘আমি এবং সাধারণ সম্পাদক দুজনেই অসুস্থ ছিলাম। তাই আন্দোলন–সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রত্যেকটি থানা ও পৌর কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য কেন্দ্র থেকে তিন সদস্যর একটি সমন্বয়ক টিম গঠন করেছিল। কিন্তু জেলা যুবদলের কমিটি বহাল রয়েছে। কেন্দ্রকে আমরা সমন্বয়ক কমিটি নিয়ে সমস্যার সমাধান করার জন্য জানিয়েছিলাম। তারা খুব দ্রুত বিষয়টি সমাধান করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।