সোহেল রানা,তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি:
বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে সুপরিচিত নাম রাজশাহীর তানোর উপজেলা। বর্তমানে উপজেলায় যেদিকে চোখ যায়, শুধু সবুজের সমারোহ। মাঠজুড়ে আমন ধানের ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে বেড়ে উঠতে শুরু করেছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল রোপা আমন ধান।
অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আমন রোপণের শুরু থেকে কৃষকদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। আমন চাষের ভরা মৌসুম আষাঢ় মাসেও ছিল না বৃষ্টির দেখা। এজন্য সঠিক সময়ে আমন ধান রোপণ করতে পারেননি প্রায় কৃষক। তবে অনেকে সেচের পানিতে রোপণ করার পরপরই হয় বৃষ্টি। কিন্তু উঁচু এলাকায় সেচনির্ভর হয়ে পড়েছে রোপা আমন। সেচ ও বৃষ্টির পানিতে প্রতিটি জমিতে রোপণ করা হয়েছে আমন ধান। যারা আমনের শুরুতে ডিপ মটারের সেচের পানিতে ধান রোপণ করছেন, তাদের প্রায় জমিতে ধানের শীষ বের হতে শুরু করেছে।
উপজেলার বিভিন্ন আমনের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কমবেশি সব কৃষকের কষ্টে অর্জিত আমন ধানের সবুজ পাতার রঙে ছেয়ে গেছে মাঠ। দু-এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি জমিতে সম্পূর্ণ ভাবে ধানের শীষ বেরিয়ে যাবে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৫০০ হেক্টর। তবে যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে আমনের ফলনও ভালো হবে। উপজেলার প্রকাশনগর গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, তিনি ২২ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। এতে তার বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৯ হাজার টাকা করে। তিনি বলেন, ধান ওঠা পর্যন্ত বিঘাপ্রতি আরো খরচ হবে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা মতো। এতে প্রতি বিঘায় আমন ধান কাটা পর্যন্ত মোট খরচ হবে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা করে।
তানোর পৌর এলাকার চাপড়া গ্রামের কৃষক বাসির উদ্দিন বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আমন চাষের জন্য কৃষককে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। আমন ধান রোপণের সঠিক সময়ে বৃষ্টি ছিল না। তার ভেতরে সার-পটাশের ব্যাপক সংকট ছিল। সার-পটাশসহ কীটনাশকের দামও বেড়েছে কয়েকগুণ, যে কারণে খরচও বাড়তি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, আমনের এই একটি আবাদ কৃষকরা অল্প খরচে বেশি লাভবান হয়ে থাকেন। যদি কোনো দুর্যোগ বা বালা না হয়, তাহলে আমনের ফলনও খুব ভালো হয়। আর কৃষকের আমন ধান চাষে কোনো রোগবালাই না হয়, সেজন্য প্রতিনিয়ত কৃষি অফিসের উপসহকারী কর্মকর্তাদের মাঠপর্যায় থেকে তদারকি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, কৃষকরা এবার আমন ধানের ভালো ফলন পাবেন।