নিজস্ব প্রতিবেদক :
কুষ্টিয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত গামছা ও লুঙ্গি বিক্রেতা হকার বাবলু ফারাজীর লাশ মামলার তদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করেছে (পিবিআই)।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১ টার সময় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর কেন্দ্রীয় গোরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ বুর্যো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
নিহত বাবলু ফারাজী (৫৮) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর এলাকার মৃত নওশের আলী ফারাজীর ছেলে। তিনি হাটে-বাজারে ঘুড়ে গামছা, লুঙ্গি, বিছানার চাদর বিক্রি করতো। পেশায় তিনি একজন হকার।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় গত ৫ই আগষ্ট সারা বাংলাদেশে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালীন সময় বাবলু ফারাজী ব্যবসা শেষে বাড়ী ফেরার পথে বেলা অনুমানিক সাড়ে ৩ টার সময় কুষ্টিয়া থানা মোড়ের পশ্চিম পার্শে পদ্মা প্রিন্টার্সের সামনে গলির মধ্যে পৌঁছালে অসহযোগ আন্দোলনকারী ও দুর্বৃত্তের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। দুর্বৃত্তরা সেখানে বিভিন্ন প্রকার মারত্মক অস্ত্র-সস্ত্র যেমন, আগ্নেয়াস্ত্র, রাম-দা, হাসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, বেঁকি, হাতুড়ী, লোহার রড, বাঁশের লাঠি, কাঠের বাটাম, ইট-পাটকেল ইত্যাদি হাতে করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে আক্রমন করতে থাকে। পরিস্থিতি ভয়াবহ বুঝতে পেরে বাবলু ফারাজী গলির মধ্যে থেকে নিজের প্রান রক্ষা করার চেষ্টা করার সময় দুর্বৃত্তদের ছোড়াগুলিতে
বাবলু ফারাজীর মাথার ডান পাশে লেগে বাম পাশ দিয়ে গুলি বের হয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বাবলু ফারাজী আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রিক্সাযোগে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবলু ফারাজীকে মৃত ঘোষনা করে।
এঘটনার প্রেক্ষিতে গত ১৯/০৮/২০২৪ ইং তারিখে নিহত বাবলু ফারাজীর ছেলে সুজন মাহমুদ বাদী হয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য সহ মোট ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৪০/৪৫ জনের নামে একটি হত্যা মামলা কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলী আদালতে দায়ের করেন। যার কুষ্টিয়া সিআর মামলা নং – ১১৫১/২৪। ধারাঃ-১৪৩/৩০২/৩৪/১১৪। মামলাটি কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলী আদালতের বিচারক মাহমুদা সুলতানা আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। দীর্ঘ একমাস ১০ দিন তদন্তের পর আরও তদন্তের জন্য কবর থেকে নিহত বাবলু ফারাজীর লাশ উত্তোলন করেন মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই কুষ্টিয়ার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মনিরুজ্জামান লাশ উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তদন্তের জন্য লাশটি কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের পর তদন্ত রিপোর্ট আদালতে প্রেরন করা হবে।
কুষ্টিয়া পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোঃ শহীদ আবু সরোয়ার জানান, বিধি মোতাবেক লাশটি কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে৷ তদন্ত বিষয়ক পরবর্তী কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।