বুধবার , ৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৩শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল

কুষ্টিয়াসহ সারাদেশে চালের চেয়ে আলুর দাম বেশি, দিশেহারা নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা

প্রকাশিত হয়েছে -




নিজস্ব প্রতিনিধি:





কুষ্টিয়াসহ সারাদেশের বাজারে এখন চালের চেয়ে আলু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে মোটা ও মাঝারি ধরনের চালের দাম কে ছাড়িয়ে গেছে আলুর দাম। দামের চোটে সবচেয়ে সহজলভ্য নিত্যপণ্যটি থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অনেক ক্রেতা। দেশের বিভিন্ন বাজারে ও কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কার্ডিনাল, গ্যানোলা, ডায়মন্ডসহ বিভিন্ন জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে নতুন আলুর ক্ষেত্রে দাম দ্বিগুণেরও বেশি। বড় বাজার থেকে পাল্লা (৫ কেজি) হিসাবে কিনলে কিছুটা কমে পাওয়া যায়। অথচ ২০ দিন আগে আলুর কেজি ছিল ৫৫-৬০ টাকা। সরকারি সংস্থা টিসিবি’র হিসাবে, গত বছর এই সময়ে খুচরা বাজারে আলুর কেজি ছিল ৪৫-৫০ টাকা, যা বর্তমান সময়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে দুই মাস আগে পণ্যটির আমদানি শুল্ক কমিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর আমদানিও হয়েছে। তবে বাজারে এর প্রভাব দেখা যায়নি; বরং দাম বেড়েছে। তথ্যসূত্র অনুযায়ী জানাগেছে, খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, হিমাগার ফটকে আলুর দাম বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে ভোক্তা পর্যায়ে। হিমাগার মালিক ও পাইকারি আলু ব্যবসায়ীরা বলেন, কৃষকের ঘরের আলু প্রায় শেষ। হিমাগারেও মজুত শেষ পর্যায়ে। তাছাড়া মৌসুমে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা তাড়াতাড়ি আলু তুলে ফেলেছেন। এজন্য কিছুটা কম হয়েছে ফলন।
দেশের বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল (গুটিস্বর্ণা ও চায়না ইরি) বিক্রি হচ্ছিল ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়। এ ছাড়া মাঝারি চালের (বিআর-২৮ ও পাইজাম) কেজি ৫৮ থেকে ৬৫ এবং চিকন চালের (মিনিকেট ও নাজিরশাইল) কেজি ৬৮ থেকে ৮০ টাকা। সেই হিসাবে শুধু মোটা ও মাঝারি নয়, ক্ষেত্রবিশেষ সরু চালের দরকেও ছাড়িয়েছে আলুর দাম।
হিমাগার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ) এর সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে গিমাগার মালিকদের কোন হাত নেই। আর বাজারে যে সিন্ডিকেটের কথা শোনা যায় সবজির দাম কম বা বেশি এজন্য সিন্ডিকেটের কোন প্রভাব নেই। দেশে ২২৩ টি হিমাগার থাকলেও কৃষকদের মাধ্যমে আলু সরাসরি বাজারে সরবরাহ করা হয়। সবমিলিয়ে বলতে গেলে এখন আলুর মজুত ফুরিয়ে আসছে। যে কারণে দাম বেশি দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এবার আলুর ফলন বাড়বে। গত বছর প্রতি কেজি আলুতে কৃষক ১৫ থেকে ২০ টাকা মুনাফা পেয়েছে। তাতে এবার তাদের মধ্যে বেশ উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। আলু চাষের জন্য গত বছর যে জমি ৩০ হাজার টাকায় লিজ নিয়েছেন কৃষক, এবার সেই একই জমি লিজ নিচ্ছেন ৫০ হাজার টাকায়।
বাজারে শীতের সবজি আসা শুরু হলেও দাম তেমন কমেনি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে অতি কষ্টে দিনযাপন করছে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা।