নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কুষ্টিয়ায় উৎসব মূখর পরিবেশে শীতকালীন ইসলামী বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) থেকে শনিবার (১১ জানুয়ারি) পর্যন্ত শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ইসলামী বই মেলা ও কিতাব মেলার আয়োজন করেছিলো কুষ্টিয়ার মোমতাজুল উলুম মাদ্রাসা ও ব্যবস্থাপনায় ছিলো কুষ্টিয়া ইসলামী জোন। পাঁচদিন ব্যাপী এই মেলা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
মেলা ঘুরে দেখা গিয়েছে, মেলায় বিভিন্ন প্রকাশনীর বেশ কয়েকটি স্টল ছিলো। কুষ্টিয়ার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখছেন এবং পছন্দমতো বই কিনছেন। শিক্ষার্থী ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে মেলার খবরে বই কিনতে ছুটে আসেন অনেকেই।
কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাব্বি বলেন, কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে ইসলামী বইমেলা এবারই প্রথমবার দেখলাম। এর আগে আমরা এ ধরনের আয়োজন দেখিনি। দেখা তো দূরের কথা, এটা কল্পনা করাও ছিল অনেকটা অসম্ভব। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা এমন আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পেরে সত্যিই আনন্দিত। সবাই বই কিনুক, ইসলাম সম্পর্কে জানুক এটাই কামনা করেন।
সাবেক শিক্ষার্থী রাব্বি আরো বলেন, যে বই থেকে কিছু শিখতে পারবো, উপকৃত হতে পারবো যেটা আমাদের পরকালেও কাজে লাগবে সেরকম বই লেখাপড়ার পাশাপাশি পড়া উচিত।
এসময় ইসলামীয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নওয়াব আলী বলেন, এমন বইমেলা অবশ্যই থাকা উচিত। অনলাইন থেকে তথ্য সংগ্রহের তুলনায় বই পড়লে বেশি উপকৃত হওয়া যায়। বইমেলা যত বেশি হবে মানুষ ততো বেশি বই কিনবে, বই পড়বে।
সাবেক অধ্যক্ষ নওয়াব আলী আরো বলেন, ইসলাম প্রচার প্রসারের জন্য এবং ইসলামী চেতনা মানুষের ভেতরে জাগ্রত করার জন্য ইসলামী বইমেলার বিকল্প নেই। সুশিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, ধর্ম মানুষকে আদর্শ শিক্ষা দেয়।
এদিকে গড়াই মহিলা কলেজের অধ্যাপক মাহাবুব আলম বিশু বলেন, বই পড়া, জ্ঞানের উৎপাদন, জ্ঞানের বিতরণ এবং সমাজের সব স্তরে জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়াই বিদ্যালয়ের প্রধান কাজ। একইভাবে আমাদের মহান স্রষ্টা পবিত্র কুরআনেও একই কথা বলেছেন। শুরুই হয়েছে ‘ইকরা’ বা পড় এর মাধ্যমে। সুতরাং বই পড়া এবং তার চর্চা জারি রাখা পরকালীন এবং ইহকালীন বিবেচনায়, যেকোনো প্রেক্ষাপটে একটি প্রধান কাজ।
অধ্যাপক মাহবুব আলম বিশু বলেন, মেলা ঘুরে দেখা গেছে নতুন বইয়ের ঘ্রাণে আমোদিত হচ্ছেন বইপ্রেমীরা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পালাবদলে এবারের ইসলামি বইমেলাতেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। যুক্ত হয়েছে অনেক নতুন নতুন আয়োজন।
অধ্যাপক মাহবুব আলম বিশু আরো বলেন, ইসলাম শুধু কালিমা নামাজ রোজা হজই না। এর বাইরে জীবনের সব বিষয়গুলো নিয়েই লেখা রয়েছে। এমন মেলা হলে সবারই আসা প্রয়োজন। ইসলামী বই মেলাতে আসলেই দেখতে পাবেন ইসলাম নিয়ে আপনি কী জানতে চান, যে বিষয়ে জানতে চাইবেন সে বইই এখানে পাবেন। ইসলাম রিলেটেড বই পড়লে আমাদের ইমান বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে যেভাবে ফিতনা বাড়ছে, সেই হিসেবে বই পড়ে জ্ঞান অর্জনের বিকল্প নেই।
উল্লেখ্য, এবারের মেলাকে নান্দনিক ও উৎসবমুখর করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ইসলামী বইমেলাকে প্রাণবন্ত করে তুলতে নিয়মিত আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়। রাত ১০টা অবদি বই কেনা বেঁচা চলতো এই মেলাতে। চারিদিকে ইসলামী বইয়ের সমারোহ। সারি সারি সাজানো বই দেখলেই পাঠকের মন ছুঁয়ে যাচ্ছিলো।