মঙ্গলবার , ৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল

এক ঘণ্টার আগুনে নিঃস্ব হলো ৭ পরিবার, আহত-১ নিহত-১

প্রকাশিত হয়েছে -





মিশন আলী, কুমারখালি :





কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭ টি পরিবারের ঘর, আসবাবপত্র, নগদটাকা, ফসলাদি, গবাদিপশু সহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বুধবার ( ১৯ মার্চ) দুপুরে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বরইচারা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়ে প্রায় ২৫ -৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
এছাড়াও আগুনে নিভাতে গিয়ে নাজমা খাতুন ও মোকাদ্দেশ হোসেন নামের দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের শরীরে প্রায় ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। বর্তমানে তারা কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ তথ্য জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মো.সালাউদ্দিন তালুকদার।
ক্ষতিগ্রস্থরা হলেন – মোকাদ্দেশ হোসেন, তার ছেলে মো. আব্দল্লাহ, আব্দুল্লাহর ছেলে রাজিব হোসেন, মৃত হাসমতের ছেলে কেরামত আলী ও আবু দাউদ, আবু দাউদের ছেলে শরিফুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম।
বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দাঁড়িয়ে আছে শুধু খুঁটি। ঘরের চাল, আসবাবপত্রসহ সবকিছু পুড়ে ছাই। উৎসুক জনতা ও স্বজনরা এক নজর দেখতে ভিড় করেছেন। বাতাসে পোড়া গন্ধঁ। স্বজনদের আহাজারি।
 এ সময় যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আনিছুর রহমান বলেন, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। এলাকাবাসী এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ততক্ষণে ঘর, আসবাবপত্র, দুইটা গরুসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২৫ – ৩০ লাখ টাকার ক্ষতির প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, মোকাদ্দেশ হোসেনের ছেলে মো. আব্দুল্লাহর গোয়ালঘরের বিদ্যুতায়িত ফ্যান থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটে। এবং প্রায় এক ঘণ্টায় ছড়িয়ে পড়ে সাতটি ঘরে। আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে তার স্ত্রী নাজমা ও বাবা মোকাদ্দেশ হোসেন অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।
২ জন মধ্যে আগুনে দগ্ধ মোকাদ্দেশ হোসেন কে কুষ্টিয়া সদর হসপিটাল থেকে রাজশাহীতে নেয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।
এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ বলেন, আগুন আমার সব পুড়া দেছে। শুধু পরনের লুঙ্গি আছে। গাঁয়ের কাপড়ডাও নাই। আগুন নিভাতি যাইয়া আমার বাবা মৃত্যুবরণ করেছেন ও স্ত্রী পুড়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমার সবই শেষ। তাঁর ভাষ্য, বসতঘর, গোয়ালঘর, আসবাবপত্র, আড়াই লাখ টাকার দুইটি ষাঁড় গরু সহ প্রায় ১০ লাখ টাকা তার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আগুনে পুড়ে গেছে পল্লী পশু চিকিৎসক সাইফু্ল ইসলামের আধাপাকা বসতবাড়িটিও। তিনি বলেন, গোস্ত সমিতির নগদ দুই লাখ টাকা, আসবাবপত্র, ফসলসহ প্রায় ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
মুহূর্তর মধ্যে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল। নিভাতে নিভাতেই ছুড়িয়ে পড়ে সবকটিই বাড়িতে। বললেন প্রত্যক্ষদর্শী মিলন হোসেন। তিনি বলেন, এ পরিবার গুলোর আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহযোগীতা পেলে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অন্তত ১০ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবু ইছাহক। তিনি বলেন, আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান তদন্ত সাপক্ষে পরে জানানো যাবে।