মঙ্গলবার , ৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল

কুষ্টিয়ায় ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ: দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের মানুষ

প্রকাশিত হয়েছে -




বিশেষ প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া।।





কুষ্টিয়ায় ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পৌর এলাকার নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট ও অসহায়ত্ব। বিশেষ করে দিনমজুর, রিকশাচালক ও দরিদ্র পরিবারগুলো সরকারের খোলা বাজারে কম দামে চাল ও আটা কিনে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তারা পড়েছেন চরম বিপাকে।
গত ৩০ জুন কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ওএমএস ডিলারদের এক বছরের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর নতুন ডিলার নিয়োগের লক্ষ্যে গত ১৭ জুলাই জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ওপেন লটারির আয়োজন করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। লটারির শুরুতেই বিএনপি সমর্থিত কয়েকজন আবেদনকারী আওয়ামীপন্থী প্রার্থীদের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে কক্ষ ত্যাগ করেন। তাদের অনুসরণ করে বাকিরাও বের হয়ে গেলে লটারি প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়।
জানা গেছে, ২১৮ জন আবেদনকারীর মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই শেষে ১১৭ জনকে চূড়ান্ত করা হয় এবং পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ডের জন্য ২১ জন ডিলার নিয়োগের কার্যক্রম চলছিল। তবে রাজনৈতিক বিরোধ,অসন্তোষ এবং পুরোনো ডিলারদের বাদ পড়াকে কেন্দ্র করে পুরো প্রক্রিয়াটি আটকে যায়। জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান জানান, কেউই পক্ষপাতের অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি, তাই পুরোনো প্রক্রিয়াই অনুসরণ করা হচ্ছিল।
এদিকে, সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী মেয়াদ শেষে নতুন ডিলার নিয়োগে বিলম্ব হলে, পুরোনো ডিলারদের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও কুষ্টিয়ায় তা মানা হয়নি। অথচ অন্যান্য জেলার মতো এখানে পুরোনো ডিলারদের দিয়ে ওএমএস চালু রাখা যেত।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে ওএমএসের চাল-আটার উপর নির্ভর করেই তাদের পরিবার চলে। অথচ দীর্ঘ এক মাস ওএমএস বন্ধ থাকায় তারা বাধ্য হয়ে বাজার থেকে বেশি দামে চাল কিনছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, “আমরা পুরোনো মেয়াদোত্তীর্ণ ডিলারদের দিয়ে ওএমএস চালু করবো না।” মাগুরা ও অন্যান্য জেলায় প্রশাসন সরাসরি ওএমএস পরিচালনা করলেও কুষ্টিয়ায় সেই ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে না বলে তিনি জানান।
এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল্ ওয়াজিউর রহমান বিদেশে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, তিনি দেশে ফিরলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই নতুন ডিলার নিয়োগ সম্পন্ন করে ওএমএস কার্যক্রম পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ততদিন পর্যন্ত খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় কুষ্টিয়া পৌরসভার নিম্নবিত্ত জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের কোনো বাস্তব সমাধান নেই বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।