আক্তারুল ইসলাম, মিরপুর, কুষ্টিয়া।।

কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত পোড়াদহ কাপড় হাট যা দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা এখানে এসে কেনাকাটা করেন। কিন্তু বিগত কিছু সময় ধরে ব্যবসায়ী সমাজের উদ্বেগ ছিল চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও অস্থির পরিবেশ নিয়ে। এ পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং ব্যবসা পরিচালনায় সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে কুষ্টিয়া র্যাব-১২ এর পক্ষ থেকে নিয়মিত নজরদারি ও বাজার পরিদর্শনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার ৩১ জুলাই, পোড়াদহ কাপড় হাট এলাকায় র্যাব-১২ এর একটি টহলদল উপস্থিত হয়ে বাজারের বিভিন্ন দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে। এসময় সাধারণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন র্যাব সদস্যরা। তারা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা নিশ্চিন্তে ব্যবসা পরিচালনা করুন। চাঁদাবাজ, দালাল ও কোনো ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে র্যাব সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

র্যাব-১২ এর কর্মকর্তারা জানান, পোড়াদহ কাপড় হাট কেবল একটি বাজার নয়, এটি একটি আর্থ-সামাজিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এ বাজারের সুনাম রক্ষা করা এবং ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। কেউ যদি বেআইনিভাবে চাঁদা দাবি করে, হয়রানি করে কিংবা ভয়ভীতি দেখায় সেটি সঙ্গে সঙ্গে র্যাবকে জানাতে বলা হয়েছে।

ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় দোকানদাররা র্যাবের এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বর্তমানে আমরা অনেকটাই নিশ্চিন্ত। আগের মতো ভয়ভীতির পরিবেশ নেই। র্যাবের উপস্থিতিতে আমরা নির্ভয়ে ব্যবসা করতে পারছি।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত একজন প্রবীণ ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের এই বাজার শত বছরের পুরনো। এখানে যারা ব্যবসা করেন, তারা কেউই চায় না বাজারের পরিবেশ অশান্ত হোক। র্যাব যে ভাবে নিয়মিত বাজারে আসছে, এতে করে চাঁদাবাজ ও দুর্বৃত্তরা গা ঢাকা দিয়েছে।

র‍্যাব-১২ জানিয়েছে, বাজারে চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা এবং কোনো ধরনের অপরাধ সংগঠিত হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধ করাই তাদের মূল লক্ষ্য। এছাড়া তারা ব্যবসায়ীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে চান যেন কেউ প্রতারিত না হন এবং অপরাধ সংগঠনের সুযোগ না পায়।

র‍্যাব-১২ এর এমন সময়োপযোগী পদক্ষেপে পোড়াদহ কাপড় হাটে বর্তমানে একটি সুশৃঙ্খল, চাঁদাবাজিমুক্ত এবং নিরাপদ ব্যবসায়িক পরিবেশ বিরাজ করছে যা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে স্বস্তির বাতাস বইয়ে দিয়েছে। এই উদ্যোগ যেন ধারাবাহিকভাবে চলমান থাকে, এমন প্রত্যাশাই সকলের।