মঙ্গলবার , ৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল

কুষ্টিয়ায় প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

প্রকাশিত হয়েছে -




নিজস্ব প্রতিবেদক :





কুষ্টিয়া সদর উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিসেস কাঞ্চন মালার বিরুদ্ধে অশোভন আচরণ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন করে জেলার সাধারণ নাগরিকসমাজ ও ভুক্তভোগী।গতকাল বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল এগারোটায় সদর উপজেলার ভুক্তভোগী বাসিন্দারা উপস্থিত হয়ে

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সামনে মানববন্ধন অংশগ্রহণ করে।পরে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত এ স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অফিসে অনুপস্থিত থাকলে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাঞ্চন মালার কাছে সেবা চাইতে গেলে সাধারণ মানুষ প্রায়ই অশোভন আচরণের শিকার হন। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি প্রায়ই নাগরিকদের উদ্দেশে বলেন, আমি কি তার পেছনে পেছনে ঘুরে বেড়াই নাকি? যা একজন সরকারি কর্মকর্তার জন্য অনুপযুক্ত। বিশেষ করে লুঙ্গি পরিহিত মানুষের সাথে অবমাননাকর আচরণ করেন তিনি এবং নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগও দেন না। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ, রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে প্রভাব খাটানো, সরকারি বরাদ্দকৃত সেলাই মেশিন ও হুইলচেয়ার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বিতরণ এবং অফিসকক্ষে বসেই স্বামীর এনজিওর প্রচার ও গ্রাহক সংগ্রহ করা। নাগরিকদের দাবি, এসব অভিযোগ প্রমাণসহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আগেই দাখিল করা হয়েছিল। জেলা প্রশাসক কার্যালয়েও তদন্ত হয়েছে। তবে দীর্ঘ তিন মাস পার হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং সম্প্রতি প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাগুলোকে “স্বাভাবিক” বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা হতাশাজনক ও প্রশ্নবিদ্ধ।

ভুক্তভোগীরা তাদের দাবিতে বলেন,

১. কাঞ্চন মালার বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

২. তাকে কুষ্টিয়া থেকে অপসারণ করে একজন যোগ্য ও জনবান্ধব কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।

৩. যাতে সাধারণ মানুষ উপজেলা অফিসে নির্ভয়ে সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারে, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

ভুক্তভোগী মোহাম্মদ মুকবল বলেন, আমরা উপজেলা অফিসে গেলে কাঞ্চন মালার অসদাচরণের শিকার হয়। তার আচরণের করণে আমরা ভয়-ভীতির মধ্যে পড়ে যাই। আমরা চাই, তার বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ ভুক্তভোগী না হয়।

ভুক্তভোগী সজল বলেন, মানুষ উপজেলা অফিসে যায় সরকারি সেবা নিতে। কিন্তু কাঞ্চন মালার কারণে সেবার পরিবর্তে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমাদের দাবি তাকে কুষ্টিয়া থেকে অপসারণ করে একজন সৎ, যোগ্য ও জনবান্ধব কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হোক।

ভুক্তভোগী জহির বলেন, উপজেলা অফিস সাধারণ মানুষের সেবার কেন্দ্র হওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমানে সেখানে গিয়ে মানুষ সেবা না পেয়ে নিরাশ হয়ে ফিরে আসছে। আমরা চাই, এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত হোক যেখানে মানুষ নির্ভয়ে সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারে। স্মারকলিপি গ্রহণ শেষে জেলা প্রশাসকের দপ্তর এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন উপস্থিত নাগরিকরা।