সমাচার ডেস্ক অনলাইনঃ
ফলাফল ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় ভালো গ্রেড নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার নেশায়, কখনোয় জ্ঞান অর্জনের জন্য শিক্ষার্থী ছিলাম না। জীবনের মধ্য পর্যায়ে এসে একটা উপলব্ধি যা কিছুই জীবনে পড়া উচিৎ জানার জন্য শেখার জন্য লেখাপড়া করলে মনেও থাকে, কাজেও লাগে। অন্যদিকে পাশ করার কিংবা গ্রেড তোলার জন্য লেখাপড়া মানুষ স্বভাবগত কারণেই ভুলে যায়। মেধাবী ব্যতিক্রম ধর্মী জন্মগত সৃষ্টিশীল মানুষ ছাড়া, যাদের স্মৃতিশক্তি প্রখর।
তেমনি ধর্মীয় পড়াশোনা সবাই করেছি আমরা মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত কিন্তু ধর্ম সম্পর্কে দুটি কথা সূত্র ধরে বলতে সাহস রাখিনা। এজন্যই আমাদের ধর্ম হাতেগোনা লোক দেখানো আমলেই রয়ে গেছে, কিন্তু ধর্মীয় নীতি নৈতিকতা কিংবা উসুল সম্পর্কে গা ছাড়া ভাব। এ বিষয়ে তরুণেরা আলাপ আলোচনা করতে অনাগ্রহী। এর চেয়ে প্রেম, মুভি, গেমের আলোচনা উত্তম। কতো মজাই না লাগে উপযুক্ত বয়সে এসব।
আজ ধর্মীয় শিক্ষায় আমরা কুয়োর ব্যাঙ বিধায়। যাদের পান্ডিত্য আছে এ বিষয়ে তাদের ভুল বা অপব্যাখায় আমরা উত্তর দিতে পারিনা বিধায় এড়িয়ে যায়। আর তারা একমুখী শিক্ষা গ্রহণ করে এতো আত্মবিশ্বাসী যে নিজের প্রয়োজন মতো শরিয়া ভিত্তিক উসুল বা ফতোয়া ফেসবুকে, চায়ের দোকানে বিলায়।
পারিবারিকভাবে কিংবা নিজ আগ্রহে যারা ধর্মীয় পড়াশোনায় এগিয়ে তারাই একমাত্র ভালো বোঝেন। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রেও সালাফি, ওয়াহাবি, মাজারী, কাদিয়ানি, জামাতি, তাবলীগী, সহ ভিন্ন ভিন্ন মত। এজন্য কোরআনের আয়াত ব্যতীত বাকি সবকিছুতেই ব্যক্তিগত জ্ঞানের আলোকে ব্যক্তিগত মতামত প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত সবাই।
দেশের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটের কারণে শিক্ষকতা পেশা ব্যতীত বাকি সকল পেশার অভিভাবকগণ উপার্জন ও সংসারী দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় সময় পার করার জন্য নিজের সন্তানের শিক্ষিত করার দায় দেন টাকার বিনিময়ে বিদ্যালয়, প্রাইভেট টিউটর কিংবা কোচিং ভিত্তিক শিক্ষা সহায়ক প্রতিষ্ঠানে। যেখান থেকে দায় সারা পড়াশোনা ছাড়া কি বা আশা করা যায়। সময় মেপে, সিলেবাস খতম দিয়েই খালাস।
এভাবেই চলতে থাকে উচ্চ মাধ্যমিক অনার্স মাস্টার্সে বিগত ২০ বছরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিষ্টার ভিত্তিক পদ্ধতিতে টাকা দেওয়া, কিছু লিখে গ্রেড নিয়ে সুন্দর সিজিপিএ পাওয়ার ধরণ দেখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়গুলোতেও এখন হর হামেশাই ফার্স্ট ক্লাস দেখা যায়। কিন্তু যখনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দেখা যায়। প্রকৃত জ্ঞানের অর্জনটা পাওয়া যায়। কি শিখলাম ১৭/১৮/২০ বছরের শিক্ষাজীবনে?
স্কুল কলেজের প্রকৃত মেধাবীরা যায় সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচন্ড প্রতিযোগিতা করে খুব আশা নিয়ে। অধিকাংশরাই সকল সরকারি জবের এবং আধুনিক স্টার্টআপের নেতৃত্ব দিচ্ছে জীবন শৃঙ্খলা মেনে চলে গড়েছে যারা তিল তিল কষ্টে। বাকিরা বেসরকারি জবের এন্ট্রি লেভেলের ভালো বেতনে। তবুও তাদের আশা ভঙ্গ হয় শিক্ষক রাজনীতি, ছাত্র রাজনীতির অপব্যবহারে অথবা প্রেম কিংবা যৌন আনন্দ কিংবা অন্যন্য সময় নষ্টকরা কার্যক্রমে। যদিও অধিকাংশ আত্মহত্যা ঘটছে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হোস্টেলেই। সেই তুলনায় বেসরকারি চাকরিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মীদের পরের কাতারে থাকা বেসরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থেকে কর্মীদের হতাশা কম থাকার কারণ ক্যারিয়ারের বাস্তবতাটা আগে থেকেই উপলব্ধি করা।
যদি গড়পত্তায় আমার ভাবনা পুরোপুরি নাও মেলে ৬০% মেলার কথা। না মিললে আমার তথ্য কিংবা জীবন উপলব্ধিতে গদল আছে। শুধরানোর পরামর্শ চাই। যদি বাকি জীবনে তা অর্জন করে যদি কিছু লাভ হয়।
এসব বলছি আগামী প্রজন্মের গ্রাজুয়েটদেরকে শিখে পড়ে নিজেকে তৈরীর চেষ্টা করো, যেনো নিজের ভাগ্য নিজেই বদলাতে পারো জ্ঞান অর্জন ও চাকরির বাজারে নিজেকে যোগ্য ভাবে তুলে ধরার জন্য দক্ষতা উন্নয়ন করে। পড়াশোনা করা অবস্থায় সুন্দর চাকরির স্বপ্ন এবং পাশ করে ইন্টারভিউয়ে টিকে মাঠে চাকরি করে বেতন তুলে চলাটার তফাৎ, না করলে বুঝবে না।
তাই জেনে শিখে ধর্মীয় হোক আর কর্মীয় হোক লেখা পড়াটা করো, যেনো যা শিখেছো তাই কাজে লাগাতে পারো। দুটি কথা বললে তার পেছনে যুক্তি দিতে পারো। যেনো আত্মবিশ্বাসটা হয় নিজের যোগ্যতায়।
এডভোকেট মোঃ মুহাইমিনুর রহমান (পলল)
গবেষক, আইন বিভাগ, চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়, পাঞ্জাব, ভারত
সহ সম্পাদক, দৈনিক কুষ্টিয়া
আইন সম্পাদক, নতুন টাইমস
সমন্বয়ক, সম্মিলিত সামাজিক জোট, কুষ্টিয়া।
আইন সম্পাদক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদ, কেন্দ্রিয় নির্বাহী সংসদ।