1. admin@protisomoyersomachar.com : admin : chayan ahmed
বয়ঃসন্ধি কালের ক্ষতিকর দিক থেকে আপনার অনুজদের রক্ষা করুন - দৈনিক দিনের সমাচার
বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
জাল সনদে চাকরি নেওয়া কুষ্টিয়ার আওয়ামী লীগ নেত্রী চাকরিচ্যুত কুষ্টিয়া চেম্বারের পরিচালকের সাথে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) শুভেচ্ছা বিনিময় তারুণ্যের শক্তিতেই মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব — জিয়া সাইবার ফোর্স কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশের প্রধান হলেন সাংবাদিক মোঃ খায়রুল আলম রফিক কুষ্টিয়ার পাঁচ ইউনিয়নে সদর উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির শুভেচ্ছা বিনিময় কুষ্টিয়ায় রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি, অস্ত্রের মুখে চিকিৎসার টাকা লুট কুষ্টিয়ার পাঁচ ইউনিয়নে সদর উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির মতবিনিময় নেতাকর্মীদের বই উপহার দিয়ে প্রশংসিত জিয়া সাইবার ফোর্সের নেতা পলাশ কুষ্টিয়ায় বাসের ধাক্কায় নারী আইনজীবীর মৃত্যু জিয়া সাইবার ফোর্সের সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হলেন পলাশ

বয়ঃসন্ধি কালের ক্ষতিকর দিক থেকে আপনার অনুজদের রক্ষা করুন

১২ বছর আগে লিখেছিলাম লেখাটি, বৃহৎ পরিসরে কুষ্টিয়ার মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুলগুলোতে সেমিনার করতে চাই। তখন নিজেই ১৯ বছরের ছিলাম, তাই কাজ করতে ভয় পেয়েছি, লোকে বলতে তোরই তো বয়ঃসন্ধি শেষ হয়নি।

বয়ঃসন্ধি কালের ক্ষতিকর দিক থেকে আপনার অনুজদের রক্ষা করুন

“তের-চৌদ্দ বছরের মতো বালাই আর নেই” কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা কতোটা মূল্যবান যখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়তাম তখন উপলব্ধি করতে পারি নি, যে কথা এখন মনে পড়লে নিজের জীবন এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখলে কড়াইগন্ডাই উপলব্ধি করতে পারছি।

খুব কষ্ট হয় সামান্য কিছু ভুলের কারনে কিশোর একটি ছেলে বা মেয়ে যখন এতো কম বয়সে হতাশায় ভোগে। লেখাপড়াই মন বসে না। পরিবারের সাথে সময় দিতে ইচ্ছা করে না। জীবনের শুরু না হতেই শেষ মনে হয়।

জানতে চাইলে এমন কিছু কারন দর্শান, যা শুনলে একবার ইচ্ছে করে ধোলাই দেই, পরক্ষনেই মনে হয় না থাক ওরা তো ছোট মানুষ। আমাদের প্রত্যেকের ঘরেই এমন কিছু না কিছু হচ্ছে প্রায়ই। কিন্তু আমরা কখনও কি ভেবে দেখেছি যে আমাদের ছোট ভাইবোনদের পড়াশুনায় অমনোযোগী, আচার ব্যবহার খারাপ, মন খারাপ, মানসিক পরিবর্তন, চালচলন এ পরিবর্তন এর কারন কি?

একটা ছেলে বা মেয়ে যখন বয়ঃসন্ধি কালে পা দেই সাধারনত তাদের বেশিরভাগ কাজ কর্ম হয় – বেশি কথা বলা, চঞ্চলতা, যেকোনো ব্যাপারে নাক গলানো, কিমবা যে কোন কিছুর উপরি বেশী বেশী আগ্রহ দেখানো। এ ক্ষেত্রে আমরা বড়রা তাদের কে প্রথমে সাবধান করি, তারপর বকা দেই এবং তা না শুনলে গায়ে হাত তুলি। কিন্তু আমরা ভাবিনা এর ফলে তাদের মনস্তাত্ত্বিক ব্যপারটা কোথাই দাঁড়াচ্ছে।

মনোবিজ্ঞানীদের মতামত বয়ঃসন্ধি কালে মানুষের আবেগ, অনুভুতি এগুলো অনেক বেশী থাকে, যার মাধ্যমে অল্পতেই খুশি বা দুঃখি হয় এরা। বোঝালে বুঝতে চাই না। নিজের বুদ্ধিটাকেই বড় মনে করে। পরিবারের বড়োদের কাছে গেলে বলে তুমি ছোটো, বড়দের মাঝে কথা বলতে নেই? ছোটদের কাছে গেলে নিজেকে বড় মনে হয়।

যার ফলে বন্ধুবান্ধবই হয় দুনিয়ার সব থেকে বেশি আপন। ভালহোক মন্দহোক তারাই একমাত্র মানুষ যারা মনের কথা বুঝতে পারে। এটা আমরা সবাই যানি প্রতিটা জিনিসেরই ভালো মন্দ দুটো দিক আছে এবং মানুষ মানুষের আচরণ দ্বারা প্রভাবিত এবং এই খান থেকেই সূচনা হয় আমাদের সমাজের কথিত মন্দ শ্রেণীর ছেলেমেয়েরা।

দেখা যায় বেশিভাগ ছেলেরা মনের মতো বন্ধু খুজতে গিয়ে ছেলেরা সিগারেট দিয়ে শুরু করে মেয়েরা মোবাইল ফোনে কথা বলা দিয়ে। আস্তে আস্তে গড়াতে গড়াতে মেয়েদের অনেকে প্রতারনার শিকার হয় আথবা ভুল বোঝাবুঝির কারনে একটা সময়ে যোগাযোগ বন্ধ হলে তারা প্রচণ্ড মানসিক চাপে থাকে।

একদিক বন্ধু হারানোর অথবা প্রতারনার কষ্ট, অন্যদিকে পরিবার কাছে ধরা পড়ে চরম শাসন। ছেলেরা আস্তে আস্তে সিগারেট থেকে অধিক বন্ধুবান্ধব এর সাথে আড্ডা, নিজেদের কে সবার মধ্যে দামি করে তোলার নেশায় ছুরি, চাকুর সাথে বন্ধুত্ত হয়। স্বাভাবিক আগ্রহের কারনে এ বয়সে ছেলেদের মেয়েবন্ধুর প্রয়োজন হয়।

না মিটলে দুঃখ ভোলার জন্য বন্ধু হয় নেশা। আস্তে আস্তে এলাকার ছিচকা মাস্তান বা নেশাখর নামে পরিচিত হতে শুরু করে। কিন্তু এই ছেলে মেয়েদের অধঃপতন এর কারণ টাও পরিবার থেকে বুঝতে পারে তখন, যখন ফেরানো সম্ভব হয়ে ওঠেনা।

কিশোর ছেলেমেয়দের এই অধঃপতনের মূল কারণ হলো তাদের বয়ঃসন্ধি কালের সময় তারা সমাজের ভালো মন্দ দিক সম্পর্কে ধারনা পায় না। পরিবার, আত্মীয়, গুরুজন, শিক্ষকরা বলে সিগারেট খাউয়া, প্রেম-ভালোবাসা, মোবাইলে কথা বলা, বন্ধুবান্ধবদের সাথে মেশা খারাপ জিনিস।

কিন্তু কেউ এটার কারণ, সুফল, কুফল, পরিনাম বুঝিয়ে বলে না। যার ফলে কেও কেও এগুলো শুনে থাকলেও গায়ে লাগে না অথবা বুঝতে পারেনা। কিশোর ছেলেমেয়দের অধঃপতনের মুখ্য কারণ পরিবার থেকে সময় ও প্রাধান্য না দেয়া। আমারা সবায় জানি যে কাউকে প্রাধান্য এবং সময় দিলে সে মানুষটার কথা সবাই মানে, শোনে কিংবা বোঝে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় মফঃস্বল অঞ্চলে পরিবারের অভিভাবকেরা বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ব্যস্ততার কারনে শিক্ষক দের উপর সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন এ বয়সের ছেলেমেয়েদের।
নিজেরা শুধুমাত্র বই খুলে আছে কিনা, টাকার দরকার কিনা, খাবার দরকার কিনা, স্কুল থেকে বাড়ী ফেরার খোজ নেয়া, মেয়েরা ছেলের সাথে মিশছে কিনা, ছেলেদের কাপড় থেকে সিগারেট এর গন্ধ বেরোচ্ছে কিনা, রেজাল্ট এর কি খবর এগুলো জেনেই দায়িত্ব পালন হয়ে যায় বলে মনে করেন।

অধিকাংশ পরিবারেই দেখা যায় বাবা মা সুশিক্ষিত না হবার কারণে শিক্ষকের মন্তব্বের উপর বিবেচনা করে ছেলে মেয়ে মানুষ করেন। তাদের সন্তানেররাই এমন বয়ঃসন্ধি কালের ক্ষতিকর কুফলে পড়ে এবং অতি অল্প বয়সেয় হতাশাই ভুগে জীবনের মূল্যবান সময়ে ভালো মতো পরিশ্রম করতে পারে না।

এবং পরিবার ও সন্তানের কেউই সুখে থাকেনা। সবাই সবার অথবা পরিবেশের দোষ দিয়ে পার পেয়ে যাই। কিন্তু হারানো জিনিস গুলা ফেরাতে পারে না। অতঃপর সংসার দুঃখের হয় সন্তানের গুনে।

আমাদের করনীয়ঃ

• এই বয়সীদের পর্যাপ্ত সময় দেয়া, কথা বলা, তাদের সাথে আন্তরিক হউয়া, যেন মনের কথা খুলে বলে।
• ভুল করলে বুঝিয়ে বলে। শুধু একবার নয় বারবার।
• বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে বোঝানো।
• সমাজের প্রতিটা ভালো মন্দ দিক গুলা খুতিয়ে খুতিয়ে তার সামনে তুলে ধরা এবং তাদের মন্তব্য জানা এবং ভুল হলে তা সংশোধন করে দেয়া।
• পড়াশুনার পাশাপাশি বিনোদনের যথেষ্ট ব্যবস্থা রাখা (পরিবারের সাথে)।
• তাদের চাউয়া পাউয়া গুলো শোনা এবং সাধ্যানুযায়ী তা পুরন করা।
• তাদের সুবিধা অসুবিধা ও সমস্ত কার্যকলাপ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা রাখা।
• নিজেদের কোন বিষয়ের খোভ তাদের উপর না মেটানো।
• যেকোনো ভুল হলে ব্যপার সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা দিয়ে শুধরানোর চেষ্টা করা এবং কোন অবস্থায় শারীরিক ও মানসিক কষ্ট না দেয়া।
• শাসনেই সুসন্তান গড়ার মানসিকতা পরিবর্তন।

আরও অনেক সমাধান হতে পারে আপনারা সমাধান লিখুন, এবং ব্যাপার সম্পর্কে আলোচনা করুন

মোঃ মুহাইমিনুর রহমান পলল
আইনজীবী, গবেষক, সংগঠক

এডভোকেট, কুষ্টিয়া জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
বিদ্যার্থী গবেষক, চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়, পাঞ্জাব।
সমন্বয়ক, সম্মিলিত সামাজিক জোট, কুষ্টিয়া।
সহ সম্পাদক, দৈনিক কুষ্টিয়া। আইন

এই ক্যাটাগরির আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ দৈনিক দিনের সমাচার
Theme Customized By Theme Park BD
error: Content is protected !!