নিজস্ব প্রতিবেদক :

কুষ্টিয়া শহরে কলেজ ছাত্রকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দিবাগ রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের কোর্টপাড়ার স্যার ইকবাল রোডের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় রুবেল (২২) নামের এক কলেজ ছাত্রকে হাত-পা বেঁধে ও মুখে গামছা পেচিয়ে মেসের ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। নিহত রুবেল কুমারখালী উপজেলার মির্জাপুর এলাকার শহিদুল মণ্ডলের ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কলেজের পাওয়ার ডিপার্টমেন্টের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। সে বনফুড বেকারীর সামনে লাল মিয়ার চারতলা ভবনটিতে বন্ধুদের সাথে মেসে থাকতেন।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মাহফুজুল হক চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে কে বা কারা রুবেলকে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে ও মুখে গামছা পেচিয়ে মারধর করে নিচে ফেলে রাখে। কয়েকজন পথচারী তাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে, ওই মেসের চতুর্থ তলার বাসিন্দা ও স্থানীয় দোকান কর্মচারী কামরুল হাসান শুভ বলেন, “রাতে হঠাৎ শোর-চিৎকার শুনে নীচে নেমে দেখি ভবনের লাগোয়া ড্রেন সংলগ্ন গলিপথের উপর রুবেলের হাত-পা-মুখ বাধা অচেতন দেহ পড়ে আছে। আশেপাশের লোকজন ঘিরে ছিল। পরে পাশের একটি দোকান থেকে ছুরি এনে বাধন কাটা হয় এবং দ্রুত রুবেলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মেসের পরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, “বিকাল থেকে রুবেলকে চিন্তিত থাকতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পরে আমরা একসাথে মেস খরচের হিসাবে বসেছিলাম। এর মধ্যে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্ষ থেকে চিৎকার শুনে নিচে নেমে দেখি মুমূর্ষ অবস্থায় রুবেল পড়ে আছে। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রুবেলের চাচা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রুবেলের এক সহপাঠী মোবাইলে জানায় রুবেল এক্সিডেন্ট করেছে। সংবাদ পেয়ে রাতেই আমরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে এসে তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় দেখি। এসময় ডাক্তার রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত রাজশাহী নিতে বলে আমরা অ্যাম্বুলেন্সে রওনা হই। কিন্তু পথে রাত ১টার দিকে নাটোর জেলার লালপুর এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই রুবেল মারা যায়।
“এটা একটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে জানান নিহতের চাচা। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চান তিনি।
ওসি মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, মেসের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে দ্বন্দ্বের কারণে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার দুই রুমমেট হৃদয় ও রাইসুলকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।