নিজস্ব প্রতিবেদক।।
গত ১৭ বছরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দেশের গণতন্ত্রকে দমন করেছে, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। ছাত্র জনতা আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবময় ঘটনা। হাজার হাজার মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এক বছর আগে ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় ৫ আগষ্ট আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তি”পালন উপলক্ষে কুষ্টিয়ার মিরপুরে উপজেলা বিএনপির আনন্দ র্যালি ও গণজমায়েত আলোচনা সভায় কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ২ হাজারের মত ছাত্র-জনতাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। অন্ধত্ব ও পঙ্গুত্বসহ আহত হয়েছেন অন্তত্ব ২০ হাজার মানুষ। যারা নিহত হয়েছে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও যারা অসুস্থ রয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনা করেন।
সাবেক এমপি অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম বলেন, আজ মিরপুরবাসী সেই নিপীড়নের জবাব দিয়েছে রাজপথে নেমে। এ বিজয়ের দিনে আমরা তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের শপথ নিচ্ছি। দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ, নবায়নযোগ্য ও মিশ্র জ্বালানির ব্যবহারে আধুনিকায়ন প্রয়োজন। পাশাপাশি বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ ও বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষার মান উন্নয়ন সহ স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন করতে হবে। দ্রুত সময়ে দেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে নির্বাচন দিতে হবে। গত ১৬ বছর এদেশের মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। আওয়ামী ফ্যাসিবাদেরা দিনের ভোট রাতে কায়েম করে প্রশাসনকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় থেকেছে। আজ সেই ক্ষমতা কোথায় গেলো। মানুষের উপর জুলুম অত্যাচার করে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। গত বছরের ৪ আগষ্টে ফ্যাসিস শেখ হাসিনা বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুর কণ্যা পালিয়ে যাবে না। তাহলে সেদিন গণভবনের দিকে ছাত্র জনতার যাওয়ার সংবাদে ৪৫ মিনিটের মধ্যে হেলিকপ্টারে পালিয়ে গেলেন কেনো। আর এখন ভারতে বসে ফেসবুকে বড় বড় কথা বলছেন, সাহস থাকলে বাংলাদেশে আসেন। এক সময় আওয়ামী লীগের নেতারা বলতো বিএনপির লোকবল নেই, আজকের উপস্থিতি প্রমান করে মিরপুরের মাটি বিএনপির ঘাটি।
সোমবার (৪ আগষ্ট) বিকেল ৪টার দিকে মিরপুর বাজার বাসস্ট্যান্ডের ঈগল চত্বরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলা শাখার আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য জেলা বিএনপির আহবায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপি কোনো গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি নয়। এটি একটি ভদ্র, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপ্রিয় রাজনৈতিক দল। দলের নেতাকর্মীদের অন্যায়-অনিয়ম থেকে দূরে থাকতে হবে। চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী কিংবা নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা বিএনপিতে জায়গা পাবে না। তিনি আরো বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজকের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি মাঠপর্যায়ের তথ্য বিশ্লেষণ করেন ও দল পরিচালনা করেন।
এতে অন্যান্যদের মধ্যে মিরপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি খন্দকার ওমর ফারুক কুদ্দুস, মিরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম আলী সহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আশরাফুজ্জামান শাহিন ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক হাজী খন্দকার টিপু সুলতান। তিনি বলেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিজয়ের এ দিনটি শুধু উদযাপন নয়, বরং স্বৈরাচার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে নতুন করে শপথ গ্রহণের দিন। এসময় বক্তারা আগামী দিনে গণআন্দোলনকে আরও বেগবান করার আহ্বান জানান।