এইচ এম ইমরানঃ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে গত ১৫ জানুয়ারি ২০২২ থেকে ২০২১- ২০২২ অর্থ বছরের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান ইজিপিপি ৪০ দিনের কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কাজের প্রথম থেকেই ব্যপক অনিয়ম আর দূর্নীতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রকল্প পিআইসিরা। শ্রমিক দিয়ে সপ্তাহে পাচদিন কাজ করার কথা থাকলেও ভেকু মেশিন দিয়ে দুই একদিন কাজ করিয়ে গরীবের টাকা মেরে লাখ লাখ টাকার বিল তুলে নিচ্ছে।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিয়ামতপুর ইউনিয়নের শালিখা শহিদুল মিয়ার ইট ভাটা হতে মাজেদের পানের বরজ অভিমুখে রাস্তা মাটি দিয়ে ভরাট। এ প্রকল্পে প্রতিদিন ১৯জন করে শ্রমিকের ৪০দিনে মোট ৩লাখ ৪হাজার টাকার বরাদ্দ রয়েছে। অথচ এই প্রকল্পে একজন শ্রমিকও না দিয়ে ভেকুমেশিন দিয়ে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেছে। এছাড়া এই ইউনিয়নে আরো দুটি প্রকল্প রয়েছে। উক্ত ইউনিয়নের হরিগোবিন্দপুর প্রকল্পে ৩০জন শ্রমিকের ৪ লাখ ৮০ হাাজার ও বলরামপুর প্রকল্পে ২৫ জন শ্রমিকের ৪ লাখ টাকা বরাদ্ধ রয়েছে। সেখানেও ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
এছাড়াও বারোবাজার ইউনিয়নের ছাদেকপুর প্রকল্পে ৩৮ জন শ্রমিকের বরাদ্ধ রয়েছে ৬ লাখ ৪০ হাজার, পিরোজপুর প্রকল্পে ৪০ জন শ্রমিকের ৬ লাখ ৮০ হাজার ও জগনন্নাথপুর প্রকল্পে ৩৮ জন শ্রমিকের ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্ধ রয়েছে। এখানেও ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
উপজেলার ৬ নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়়নের ৩ টি প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে করা হয়েছে। ৩ টি প্রকল্পের মোট শ্রমিকের সংখ্যা ৯৩ জন। বরাদ্ধকৃত টাকা হলো ১৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। ৯৩ জন শ্রমিক ৪০ দিন কাজ করে প্রতিদিন মজুরি হিসেবে ৪’শ টাকা করে পাবেন। তাদের মজুরির টাকা নিজ নিজ মোবাইলে বিকাশ/নগদের মাধ্যমে পাবেন। ১৩ মার্চ ৪০ দিনের কর্মসূচির প্রথম কিস্তির টাকা শ্রমিকদের মোবাইল নাম্বারে ঢুকেছে। ৯৩ জন উপকারভোগীর যে মোবাইল নাম্বারে টাকা ঢুকেছে তাদের অনেকেই ৪০ দিনের এই কর্মসূচির আওতায় কাজ করেনি বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইউপি সদস্য। আবার প্রকৃতপক্ষে যারা কাজ করেছেন তাদের মোবাইল নাম্বার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নিকট জমা দেননি। চেয়ারম্যানের দেওয়া উপকারভোগীদের নামের তালিকা ঠিক আছে কিনা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তা যাচাই-বাছাই করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। বরং তিনি ও তার অফিসের ক্যাজুয়াল পিয়ন পিন্টু হোসেন এসব অনিয়মের ব্যাপারে সব জেনেও পদক্ষেপ নেননি।
এছাড়াও এই উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতেও ইজিপিপি প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতিসহ সকল শ্রমিকদের মোবাইল সিম জব্দ করে টাকা পিআইসিরা তুলে নিয়েছে বলে শত শত অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ-হেল-মাসুম জানান, প্রকল্প পরিদর্শনের যাচ্ছেন, মোটরসাইকেলের উপর আছেন, তাই কথা বলতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে জেলা ত্রান ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা বজলুর রশিদ জানান, কোথাও ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করা হয়েছে বলে তার জানা নেই। যদি কোথাও এমন অভিযোগ প্রমানিত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।